বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ দলত‍্যাগী বিধায়কের

20th December 2020 9:35 pm বর্ধমান
বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ দলত‍্যাগী বিধায়কের


নিজস্ব সংবাদদাতা ( কালনা ) : মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের চক্রান্তের কারণেই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হোন মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা ! বিজেপিতে যোগ দিয়েই পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে এইভাবেই মারাত্মক অভিযোগ তুললেন মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা।শুধু তাই নয় তৃণমূল দলে থাকা তোলাবাজদের মদত ও ক্ষমতা দিয়ে তাকে সরানোর চক্রান্ত করার জন্যই তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্ত্রীকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করান সৈকতবাবু।কয়েকদিন আগেই এই ধরনের অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুন্ডুও। যদিও এই ধরনের অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ  তৃণমূল নেতৃত্ব । অন্যদিকে রবিবারই বিধায়কের দলীয় কার্যালয় দখল নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
                            মেদিনীপুরে বিজেপিতে যোগদানের আগেই জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ সহ উচ্চ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছাড়েন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুন্ডু। ঠিক তারপর বিজেপিতে যোগ দিয়েই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা।সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া তার এমনিই এক ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই চান্চল্য ছড়ায় সৈকত পাঁজার অনুগামীদের মধ্যে । সেই ভিডিওতে সৈকত পাঁজা বলেন,‘২০১৬ সালে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ  করে। সেটাও আমার বাবা সজল পাঁজার হাত ধরে । তারপর ছয়-সাতমাস পর আমার বাবা মারা যান।তারপর দল আমাকে টিকিট দিলে সেখান থেকে আমি নির্বাচিত হই। প্রথম আট-নয় মাস ঠিকঠাকই চলে। তারপর থেকে একটার পর একটা চক্রান্ত একটা বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার চেষ্টা।যারা তোলাবাজ, যাদের মুখ দিয়ে সোজা করে দলের নামটা উচ্চারণ হয় না,তাদেরকে ক্ষমতা দেওয়া,একটার পর একটা চক্রান্ত করে আজকে আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।আমি ভারতীয় জনতা পার্টিতে সেইজন্য যোগদান করেছি। আর যতগুলো চক্রান্ত হয়েছে যা যা হয়েছে সব কিছুই হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের নির্দেশে বা তার নেতৃত্বে।’ সৈকত পাঁজার এই বিষ্ফোরক অভিযোগের পরেই স্বাভাবিক কারণেই বিধায়ক অনুগামীরা তৃণমূলের মন্ত্রীর এহেন আচরণে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ও তার নিন্দায় মুখর হোন । যদিও জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে এইভাবেই ফের মুখ খোলেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুন্ডু।রবিবার তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ছাপ্পা মেরে ভোট করা থেকে,মীমাংসায় টাকা,বাড়ি তৈরীতে টাকা,পায়খানা তৈরীতে টাকা নেওয়ার বিরুদ্ধে তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথকে বারবার আমি জানালেও তাদের বিরুদ্ধে  তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেননি।যারা চুরি চামারি করলো তাদের কোনো বিচার না করে তাদেরকেই বিভিন্ন পদে জেলা সভাপতি বসিয়ে দিয়েছেন।আমার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।’এই বিষয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে ফোন করা হলে ওনার পি,এ ফোন ধরেন ও জানান উনি দলের সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। পরে ফোন করবেন।যদিও রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,‘চক্রান্ত যদি করেই থাকে তাহলে এতদিন রাজ্য নেতৃত্বকে জানাননি কেন? আসলে ওই সবই হোলো বিজেপির শেখানো বুলি। আর সেই সবই আওড়াচ্ছে ওরা।’ অন্যদিকে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে থাকা বিধায়ক সৈকত পাঁজার দলীয় কার্যালয় দখল নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। রবিবারের এই ঘটনার কথা তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বীকার করলেও বিজেপি নেতা সৈকত পাঁজা বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানাবেন বলে জানান।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।